প্রযুক্তি বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে চলমান আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। তাঁর মতে, ভবিষ্যতে এআই অনেক ক্ষেত্রেই মানুষের জায়গা দখল করবে। তবে সব জায়গায় নয় — কিছু পেশায় মানুষের বিকল্প কখনোই হতে পারবে না প্রযুক্তি।
২০২২ সালে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি বাজারে আসার পর থেকেই এআই প্রযুক্তি বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। এর ধারাবাহিকতায় গুগলের জেমিনি, মাইক্রোসফটের কোপাইলট, ডিপমাইন্ডের ডিপসিক-এর মতো চ্যাটবট নানা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে পরিবর্তন আসছে কাজের ধরন ও দক্ষতার চাহিদায়।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, কোডিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, গ্রাফিক ডিজাইন — এমন অনেক পেশাই ধীরে ধীরে এআইয়ের দখলে চলে যাচ্ছে। বিল গেটসও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি মনে করেন, পুরো প্রক্রিয়াটিতে মানুষের ভূমিকা থেকেই যাবে।
বিল গেটসের ভাষায়, “এআই কখনোই সব ক্ষেত্রে মানুষের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে না। বিশেষ করে কিছু পেশায় মানুষের সৃজনশীলতা, চিন্তাশক্তি ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অপরিহার্য।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জীববিজ্ঞানী বা বায়োলজিস্টদের কথা। তাঁর মতে, রোগ নির্ণয়, জিনোম বিশ্লেষণ কিংবা নতুন ওষুধ আবিষ্কারে এআই বড় ধরনের সহায়ক হতে পারে, তবে মানুষের দক্ষতা ছাড়া এসব ক্ষেত্রে কার্যকর ফল পাওয়া সম্ভব নয়।
এছাড়া জ্বালানি খাতের কথাও উল্লেখ করেন গেটস। তাঁর মতে, এ খাতে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করা এখনো অত্যন্ত কঠিন।
তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত অগ্রগতি নিয়ে প্রযুক্তি দুনিয়ায় শঙ্কাও বাড়ছে। এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী জেনসেন হুয়াং, ওপেনএআইয়ের স্যাম অল্টম্যান ও সেলসফোর্সের সিইও মার্ক বেনিওফের মতো প্রযুক্তিবিদরা মনে করেন, ভবিষ্যতে এআই মানুষের বুদ্ধিমত্তাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। যা কর্মসংস্থানের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
তবে বিল গেটসের আশাবাদী দিক নির্দেশনা — “এআই মানুষের চাকরি কেড়ে নেবে না বরং মানুষের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করবে। কাজেই আমাদের উচিত এআই-নির্ভর দক্ষতা অর্জন করা এবং নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে শেখা।”